বিগত কয়েক বছর ধরেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের Dearness Allowance বা বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে একটা বড় ঝামেলা তৈরি হয়েছে। এই সমস্যাটি নিয়ে রাজ্য সরকারের সাথে কর্মচারীদের অনেকবার আন্দোলন হয়েছে এবং পুলিশের সাথে হাতাহাতি ও লাঠিচার্জ পর্যন্ত হয়েছে। সমস্যাটি নিয়ে সরকারি কর্মীরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিন্তু, কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া টাকা শীঘ্রই মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার রায়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
West Bengal Dearness Allowance Case In Supreme Court
সরকারি কর্মীদের এই বকেয়া নিয়ে রাজ্যে আন্দোলন কোনভাবেই থামছে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পরও এই মামলা দিন দিন পিছিয়েই চলেছে এর কারণে সরকারি কর্মীরা তাদের আসা হারাচ্ছেন বলে এমনটাই মনে হচ্ছে। সরকারি কর্মীরা এই মামলার শুনানি তাড়াতাড়ি করার জন্য মহামান্য আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন কিন্তু, এখানেও তারা সুপ্রিম কোর্টের কাছে আরো একবার বড় ধাক্কা খেল। সরকারি কর্মীদের এই আর্জি সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। এই বকেয়া ভাতার মামলা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে যার ফলে সরকারি কর্মচারীরা তাদের বকেয়া পাওয়ার আশাও খানিকটা নিম্নমুখী হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের কাছে এই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি জানালেও সুপ্রিম কোর্ট সেই আর্জি শুক্রবার দিন খারিজ করে দেয়। তবে ২০২৪ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারিতে এই মামলার শুনানির আশ্বাস দেয় কোর্ট। প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলার রায় সরকারী কর্মীদের পক্ষে দেয়, কলকাতা হাইকোর্টের রায়তে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছিল ৩১ শতাংশ হারে Dearness Allowance দিতে হবে সরকারি কর্মীদের কিন্তু রাজ্য সরকার হাইকোর্টের রায় কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
এখানে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রাজ্য সরকার যেটা বলেছে যদি হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে হয় তাহলে ৩১% Dearness Allowance দিতে হবে যা প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা রাজ্যের পক্ষে এত টাকা বহন করা খুবই কঠিন। ২০২২ সালের ৩রা নভেম্বর এই মামলা দায়ের করা হয়। রাজ্যের পক্ষ হয়ে সওয়াল করেন মুকুল রহতগী, তারপর রাজ্যের আইনজীবীকে বদলে অভিষেক ভানু সিংভিকে দেওয়া হয়। এখান থেকেই পরপর তারিখ বদল করা হয়।
বিভিন্ন কারণে মামলা শুনানি আরো পিছিয়ে যায় ১৪ ই জুলাই,এই নিয়ে ৯ বার মামলা পিছিয়ে যায়, পরের তারিখ ৩ রা নভেম্বর দেওয়া হয়। এবং এই তারিখও বদল করা হয় যার কারণে কর্মীরা অনেক আশাহত হন। রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা এখন ৬ শতাংশ হারে ডিয়ে পাচ্ছে আর কেন্দ্র সরকারের কর্মীরা ৪৬ শতাংশ হারে DA পাচ্ছে।
তবে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়টি নিয়ে কোন রকম সঠিক উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। আগামী বছরের সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়টি নিয়ে কি নির্দেশ দেয় তা নিয়ে সকলে চিন্তায় আছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বছর শেষের পরেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন আর সেখানেই খানিকটা চিন্তা, এই ভোটের সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কি হবে সেই চিন্তা অনেকেরই। Dearness Allowance মামলা নিয়ে কি হতে চলেছে তা শুধু অপেক্ষার পরই জানা যাবে।